খাদ্যাভ্যাস

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা

ডায়াবেটিস রোগীকে সব সময় খাদ্যদ্রব্য ভালোভাবে বিবেচনা করে খাওয়া উচিৎ। তা না হলে রোগীর সুগার বেশি হয়ে ক্ষতির কারণ হতে পারে। ডায়াবেটিস ধরা পড়লেই রোগীরা অবিলম্বে তাদের খাদ্যের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিৎ। এই লেখায় ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা কেমন হওয়া উচিৎ তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখাতে সাহায্য করবে। চলুনজেনে নিই ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকায় কি কি থাকা উচিৎ

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা

ডায়াবেটিক রোগীর খাদ্য তালিকা কেমন হওয়া উচিৎ

একটি স্বাস্থ্যকর ও সুষম ডায়েটের জন্য পাচঁটি প্রধান গ্রুপ বা পদের খাবার খাওয়া প্রয়োজন। খাবারের মূল ৫টি গ্রুপ হল:

  • ফলমূল ও শাকসবজি
  • শ্বেতসার সমৃদ্ধ খাবারঃ লাল বা বাদামী চালের ভাত, লাল আটার রুটি বা পাউরুটি, আলু
  • প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারঃ ডিম, মাছ, মাংস, শিম ও অন্যান্য বীন, ডাল, বিভিন্ন ধরনের বাদাম,
  • দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারঃ দই, ছানা ও পনির এবং
  • বিভিন্ন ধরনের তেল, মাখন, ঘি

ফলমূল ও শাক সবজিঃ 

ফলমূল ও শাক-সবজিতে ভিটামিন ডি, খনিজ পদার্থ ও আঁশ প্রচুর পরিমাণে থাকে। কিন্তু ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম থাকে। তাই এগুলো ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকায় রাখা উচিৎ। এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও প্রধান ভূমিকা পালন করে।

কোন ফলগুলো খাওয়া ভাল?

  • সবুজ আপেল
  • আমড়া
  • আমলকি
  • কালো জাম
  • জাম্বুরা
  • জামরুল

এসব ফলের ক্যালরি খুব সামান্য এবং ফাইবারযুক্ত হওয়াই এগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারী।

কিছু কিছু ফল থাকে , যেগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে। সে ধরনের ফলগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো যেমনঃ

  • আম
  • পাকা কলা
  • কাঁঠাল
  • পাকা পেঁপে

তাই বলে কী আম কলা একেবারেই খেতে পারবো না?

অবশ্যই খাওয়া যাবে যদি আপনার সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রনে থাকে। আম খেলে এক টুকরো খান এবং কলা খেলে সপ্তাহে ১টি খান। তবে ফলের রস খাওয়া যাবে না ডাইবেটিক রোগীদের। ফলের রসে কোনো রকম ফাইবার থাকে না শুধু মাত্র প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে তাই এটা না খাওয়াই উত্তম।

ফল ও শাক-সবজি কতটুকু খাওয়া উচিত?

প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ পরিবেশন ফল ও শাক-সবজি খাওয়া উচিৎ। হাতের তালুতে যতটুকু খাবার উঠে তাকেই ১ পরিবেশন বলে।

ডায়াবেটিক রোগীর সুবিধার জন্য শাকসবজিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

শর্করা সম্বলিত সবজি

আলু, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচা কলা, বরবটি, থোড়, মোচা, বিট, শিম, মাটির নীচের কচু, গাজর, কাঁকরোল, শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, শালগম, ইঁচড়, ঢেঁড়স, বেগুন, মটর শুঁটি, কচুরমুখী, পাকা টমেটো।

শর্করাবিহীন শাকসবজি

সব ধরনের শাক, যেমন- লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, কলমিশাক, ডাঁটাশাক, কচুশাক ইত্যাদি এবং সবজি যেমন  ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, ওলকপি, কাঁচা টমেটো, কাঁচা পেপে, শসা, খিরা, উচ্ছে, করলা, ঝিঙা, চিচিঙা, পটল, লাউ, চালকুমড়া, ডাঁটা, সজনা, ধন্দুল, ক্যাপসিকাম, কাঁচামরিচ, মাশরুম ইত্যাদি।

রান্নার উপরও ডায়াবেটিক রোগীর রক্তে শর্করার বাড়া-কমা অনেকটা নির্ভর করে। যেমন- আলুর চিপস বা ফ্রেন্সফ্রাইয়ের চেয়ে সিদ্ধ আলু খেলে শর্করার পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। গাজর কাঁচা না খেয়ে সিদ্ধ অবস্থায় খেলে শর্করার পরিমাণ দ্রুত বেড়ে যায়। তবে সবজি বেশি সিদ্ধ না করে একটু কাঁচা কাঁচা করে রান্না করা উচিত। এতে স্বাদ, গন্ধ, রঙ এবং ভিটামিন অটুট থাকে। [সূত্র]

শর্করা জাতীয় খাবার

আমাদের শরীরে কার্বোহাইড্রেট এর বিশাল ভূমিকা রয়েছে, এটি শরীরের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। সুতরাং কি ধরনের শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়া হচ্ছে এ ব্যাপারে খেয়াল রাখা উচিত। কারণ কিছু শ্বেতসারজাতীয় খাবার খুব দ্রুত রক্তে সুগার তথা গ্লুকজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। এসব খাবারকে বলা হয় উচ্চ ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই)’-যুক্ত খাবার। আবার কিছু স্লো রিলিজ শর্করা জাতীয় খাবার রয়েছে যাদের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। এগুলো ধীরে ধীরে শরীরে রক্তের সাথে মিশে ও ধীরে ধীরে ইনসুলিন নিঃসরণে সাহায্য করে।

লাল আটার রুটি, লাল চালের ভাত, ব্রাউন ব্রেড, ওটস, ওটমিল, চিড়া ইত্যাদি হল জটিল শর্করা। এদের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। এগুলোতে উচ্চ পরিমাণে আঁশ থাকে। এতে করে খাদ্যআঁশ রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

আঁশ যুক্ত খাবার সনাক্তকরণ

কি পরিহার করবেনকি গ্রহন করবেন
সাদা চালের ভাতবাদামি বা লাল চাল এর ভাত
রেগুলার পাস্তাগমের পাস্তা, স্পেগেটি
সাদা পাউরুটিগমের রুটি, লাল আটার রুটি
চিনিযুক্ত সেরিয়ালগোল ওটস
কর্ণফ্লেক্সসবুজ শাক
ইনস্ট্যান্ট ওট মিলআঁশ ও কম চিনি যুক্ত সেরিয়াল

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার

খাদ্যতালিকায় প্রোটিন একটা আবশ্যিক বিষয়। প্রোটিন এমন ম্যাক্রো নিউট্রিয়েন্ট যা কখনোই বাদ দেওয়া উচিৎ নয় কারণ এটা কোষ মেরামত ও ভাগ করতে সাহায্য করে। প্রোটিন ক্ষুধা নিবারণ করতে সাহায্য করে। পেশি গঠনে সহায়তা করে। এটি দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখে।

কিছু গবেষণায় টাইপ 2 ডায়াবেটিসের সফল ব্যবস্থাপনা পাওয়া গেছে যার মধ্যে রয়েছে খাবারের পরিকল্পনার সাথে সামান্য উচ্চ মাত্রার প্রোটিন (২০-৩০%), যা তৃপ্তি বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে। ডায়াবেটিক কিডনি রোগে আক্রান্তদের জন্য (অ্যালবুমিনিউরিয়া অথবা গ্লোমেরুলার ফিল্ট্রেশন রেট হার কম),  প্রতিদিন প্রতি কিলোগ্রাম শরীরের ওজনের ০.৮ গ্রাম খাদ্যের প্রোটিন সুপারিশ করা হয়েছে। [সূত্র]

উদ্ভিদ ও প্রাণীভিত্তিক উভয় খাবারেই প্রোটিন বিদ্যমান থাকে। ভাল প্রোটিন জাতীয় খাবার হলো ডিম, অল্প চর্বি জাতীয় দুধ, টক দই, দেশজ মাছ ও মুরগি ইত্যাদি। ডায়াবেটিস রোগীদের প্রোটিন জাতীয় খাবারে বাধা নেই যদি না তাদের কিডনি তে কোন জটিলতা না থাকে। অতিরিক্ত ক্যালরি এড়াতে বেকিং বা গ্রিল করার চেষ্টা করতে হবে ও  ভাজা এড়িয়ে চলতে হবে। তবে লাল মাংস (যেমন গরু, খাসি ও ভেড়ার মাংস) ও প্রক্রিয়াজাত মাংস (সসেজ, পেপারনি ও সালামি)-এর পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে, কারণ এগুলো খাওয়ার সাথে ক্যান্সার ও হার্টের রোগের সম্পর্ক পাওয়া গেছে। 

দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার

খনিজ পদার্থ থেকে প্রোটিন নানা পুষ্টি উপাদানে ভরপুর হলো দুধ। এছাড়াও রয়েছে রকমারি ভিটামিন এবং ক্যালসিয়াম। এই সব উপাদানই ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য জরুরি। দুধে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে যা হাড়ের শক্তি বজায় রাখে। ডায়াবেটিক রোগীরা দুগ্ধজাত খাবার যেমন-টক দই, মাঠা খেতে পারেন।

ডায়াবেটিক রোগীরা দুধ কিভাবে খেতে পারেন?

  • রক্ত শর্করার মাত্রা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম দারুচিনি। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, পটাসিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে। দুধের সঙ্গে যদি নিয়মিত দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে খাওয়া যায়, তা হলে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটাই কমতে পারে।
  • হলুদ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। দুধের সঙ্গে যদি হলুদ মিশিয়ে খাওয়া যায়, তবে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কমবে ডায়াবিটিস জনিত নানা শারীরিক সমস্যা।
  • দুধের সঙ্গে বাদামবাটা মিশিয়ে খেলেও শরীর বিভিন্ন ধরনের উপাদান পাবে। যেমন- প্রোটিন, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি।  তাছাড়া ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

ডায়াবেটিক রোগীর খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরনের তেল

চর্বি যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তেমনি রয়েছে এর অনেক গুন। উপকারী চর্বি যেমন, বাদাম, অলিভ ওয়েল, মাছের তেল ইত্যাদি ডায়াবেটিক রোগীরা খেতে পারে। তবে ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাবারের অতিরিক্ত গ্রহণ ডায়াবেটিক রোগীর জন্য ক্ষতিকর।

স্বাস্থ্যকর চর্বিঃ অসম্পৃক্ত চর্বি সবচেয়ে ভাল, এটির প্রধান উৎস হল মাছ ও উদ্ভিজ্জ তেল যেমন–  অলিভ অয়েল, বাদামের তেল ইত্যাদি। মাছের তেলে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করার  পাশাপাশি মগজ ও                                           হৃদপিণ্ডকে সবল রাখে।

অস্বাস্থ্যকর চর্বিঃ সবচেয়ে খারাপ চর্বি হল ট্রান্স ফ্যাট। ডিপ ফ্রাই খাবার, একই তেলে ভাজা খাবার, প্যাকেটজাত খাবার, প্রাণীজ তেলে ভাজা খাবার হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর চর্বি

সম্পৃক্ত চর্বিঃ সাধারণত বিভিন্ন দুগ্ধজাত পণ্য, লাল মাংস, ট্রপিক্যাল তেল এর উৎস।  এটি খাওয়া যেতে পারে, কিন্তু হিসেব করে।

কি ভাবে অস্বাস্থ্যকর চর্বি বা তেল পরিহার করবেন?

  • চিপস বা ক্র্যাকারস এর পরিবর্তে বাদাম বা বীজ জাতীয় খাবার খেতে পারেন। সাধারণ বাটার বা মাখনের পরিবর্তে পিনাট বাটার বেশ ভাল
  • খাবার কড়া করে ভাজার পরিবর্তে হালকা তেলে ভাজি, সিদ্ধ খাবার বা সেকা খাবার খেতে পারেন
  • প্যাকেটজাত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার পরিহার করুন
  • লাল মাংসের (যেমন– গরুর মাংস) পরিবর্তে চামড়াবিহিন মুরগির মাংস, মাছ, কুসম ছাড়া ডিম ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিন খেতে পারেন
  • পাস্তা, সবজি ও সালাদে জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করতে পারেন
  • স্যান্ডউইচ, বার্গার ইত্যাদির মাংসে থাকে অসম্পৃক্ত চর্বি, এগুলোতে মাংসের বদলে   সবজি যোগ করলে খাবারে ভিন্নমাত্রা আসবে
  • পরিমিত দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে কি কি খাবার বাদ দিতে হবে

  • সরল শর্করা জাতীয় খাবারের মধ্যে রয়েছে- চিনি, গুড়, মধু, মিষ্টি, ফলের রস, কোল্ড ড্রিংকস, আইসক্রিম এই ধরনের খাবারে প্রচুর ক্যালরি থাকে এবং সামান্য পরিমাণ খেলেও খুব দ্রুত রক্তে সুগারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
  • চিনির তৈরি কুকিস, সিরাপ বা যেকোন ধরণের পানীয় খুব ক্ষতিকর। এগুলো খেলে রক্তের সুগার অনেক বেড়ে পায়। এই কারণে ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে থাকেনা। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের এই খাবার গুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
  • উচ্চ গ্লাইসেমিক সূচকযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে কারণ এগুলি রক্তে চিনির মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • সাদা পাউরুটি, সাদা ভাত, সাদা পাস্তা সহজে হজম হলেও এই খাবার গুলোতে যে মাত্রায় সুগার থাকে তা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ভাল নয়। এই খাবার গুলো দেহের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে বাধা দেয়। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের এই জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো।
  • কিশমিশ ও শুকনো ফল খাওয়া খুব স্বাস্থ্যকর হলেও ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য তা ভাল নয়। যেকোন ফল যখন ড্রাই করা হয় তখন তাতে চিনির পরিমান বেড়ে যায়। তাই তখন তা দেহের জন্য অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায়।
  • ফলের জুস থেকে আস্ত ফল খাওয়াটাই অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। বিভিন্ন ধরনের ফলে থাকে ফাইবার এবং কার্বোহাইড্রেট। কিন্তু বাইরে থেকে যেকোন ফলের জুস কিনে খাওয়াটা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে চিনি ও নানা ধরণের কেমিক্যাল। এই সমস্ত উপাদান ডায়াবেটিক রোগীদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।
  • অতিরিক্ত ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া বাদ দিতে হবে। যেমন- ঘি, মাখন, মার্জারিন, চিজ, পেস্ট্রি ইত্যাদি।
  • অতিরিক্ত লবণ উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়। দিনে মোট ১ চা চামচ (৫ গ্রাম) এর বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। 
  • তেলে ভাজা খাবার খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ এ ধরনের খাবার রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক হওয়ার আশংকা থাকে।
  • ময়দা জাতীয় খাবার খাওয়া বাদ দিতে হবে। কারণ ময়দায় ফাইবার থাকে না। ফলে ময়দার তৈরি লুচি, পরোটা খেলে দেহে শুধু অতিরিক্ত ক্যালরি প্রবেশ করে।
  • এলকোহল, ধূমপান ও প্যাকেট জাতীয় খাবার খাওয়া বাদ দিতে হবে।

ডায়াবেটিস খাবার নিয়ে কিছু ভুল ধারনা

ডায়াবেটিস রোগের খাবার নিয়ে অনেক সময় কিছু ভুল ধারনা মানুষের মধ্যে দেখা যায়-

  • অতিরিক্ত চিনি খাওয়া ডায়াবেটিসের কারণ
  • ডায়াবেটিস হলে আপনাকে অবশ্যই সবার থেকে আলাদা খাবার খেতে হবে
  • মিষ্টি জাতীয় খাবার একেবারেই খাওয়া যাবে না
  • একেবারেই শর্করা সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যাবে না

কেমন হওয়া উচিত ডায়াবেটিক রোগীর ডায়েট চার্ট

প্রত্যেক ডায়াবেটিক রোগীর জন্য কিন্তু খাদ্যতালিকা একরকম হবে না। ডায়াবেটিক রোগীদের খাবার ক্যালোরির উপর নির্ভর করে। প্রত্যেক রোগীর ইনসুলিন উত্পাদনের মাত্রা, রক্তে সাধারণভাবে বিদ্যমান চিনির মাত্রা, বয়স, লিঙ্গ, উচ্চতা, ওজন, কাজ ইত্যাদি অনুপাতে সংশ্লিষ্ট পুষ্টিবিদের কাছে গিয়ে খাদ্যতালিকা তৈরি করা হয়।

ডায়াবেটিক রোগীদের সঠিক পরিমাণ খাবার খাওয়া এবং সঠিক সময়ে খাবার খাওয়ার ওপর বিশেষ নজর দিতে হয়। খাদ্যের নিয়ম না মানলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব। তবে ডায়াবেটিসের পাশাপাশি যদি শারিরিক অন্য কোন জটিলতা থাকে তবে সে ক্ষেত্রে রোগীর চাহিদা ও অবস্থা অনুযায়ী ডায়েট প্লান করতে একজন ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিতে হবে।

এখানে একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ১৬০০ ক্যালরির চাহিদার একটি স্যাম্পল ডায়েট চার্ট বা খাবারের মেন্যু দেয়া হল।

সকালের নাস্তাপরিমাণ
গমের আটার রুটিসর্বচ্চ ৩ টা (৯০ গ্রাম)
ডিম অথবা ডাল১টা অথবা (১০ গ্রাম)
সবজি তরকারিপ্রয়োজন অনুসারে

Farhana Yeasmin

Farhana Yeasmin একজন পুষ্টিবিদ, কাজ করছেন ডায়েট এবং নিউট্রিশন কনসালটেন্ট হিসাবে। তিনি ফুড এবং নিউট্রিশনের উপর স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পুর্ন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করে বিভিন্ন তথ্য এবং উপাত্ত দিয়ে Health বার্তার সহযোগিতা করে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button