কফি খাওয়া ছেড়ে দিলে শরীরে কি ঘটবে
- Knowledge is power
- The Future Of Possible
- Hibs and Ross County fans on final
- Tip of the day: That man again
- Hibs and Ross County fans on final
- Spieth in danger of missing cut
সত্যিকারের কফি লাভারদের ২ ধরনের ব্যক্তিত্ব থাকে – প্রথমত তারা কফির কাপে চুমুক দেওয়ার আগে একরকম থাকে এবং কফি খাওয়ার পর একরকম হয়ে যায়। এটার থেকেই আপনি কিছুটা হলেও ধারণা পাবেন যে ক্যাফেইন কতখানি আসক্তির ব্যাপার হতে পারে।
তবে এটা হয়ত অনেকেরই জানা যে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এক কাপ কফি খাওয়ার অভ্যাস ছাড়াটা কতটা কষ্টের! তাই হেলথ বার্তা টিম ঠিক করেছে এটা আপনাদের জানানো আবশ্যক যে, আপনি যদি পুরোপুরি কফি খাওয়া ছেড়ে দেন তাহলে আপনার শরীরে কোন ধরনের পরিবর্তন ঘটতে পারে এবং তখন আপনার কি করা উচিত।
আপনার ওজনে পরিবর্তন আসবে
অপ্রত্যাশিতভাবে শরীরের ওজন পরিবর্তন হলে যে কারও জন্য তা চাপ তৈরি করতে পারে এবং কফি ছাড়ার কারণে মাঝে মাঝে এটি হয়ে থাকে। ক্যাফেইন বিপাকের বুস্টার হিসাবে কাজ করে যার অর্থ আপনার শরীর আরও দক্ষতার সাথে ক্যালোরি বার্ন করতে পারে। আপনি যখন কফি পান করা বন্ধ করেন, তখন ক্যালোরি বার্ন করতে ঐ পরিমাণ ক্যাফেইন শরীর আর সরবরাহ করতে পারবেনা এবং বাস্তবে আপনার ওজন কিছুটা বেড়ে যাবে।
অন্যদিকে আপনি যদি দিনে ৩ বার ফ্রেপ্পাচিনো খাওয়ার অভ্যাস ছেড়ে দেন তাহলে আপনার ওজন অবিশ্বাস্যভাবে কমে যাবে। কারণ শরীর আর সেই পরিমাণ ক্যালোরি পাবেনা।
মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হবে
কফি মানুষকে আরও সজাগ করে তোলে কারণ এটি ডোপামিন এবং অ্যাড্রেনালাইন নিঃসরণকে উদ্দীপিত করে, যা মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ এবং রক্তচাপ বাড়ায়। এর অর্থ হল একবার আপনি কফি পান করা বন্ধ করে দিলে আপনি কাজ বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়ায় মনোনিবেশ করতে অসুবিধার সম্মুখীন হবেন কারণ আপনার মস্তিষ্ক যেভাবে ব্যবহার করা হত তেমনভাবে আর উদ্দীপিত হবে না।
মাঝে মাঝে কেঁপে উঠতে পারেন
এটি শুনলে গুরুতর মনে হতে পারে তবে এটি নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হওয়ার কিছু নয়। ক্যাফেইন কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের জন্য উদ্দীপনার একটি শক্তিশালী উৎস। একবার আপনি এটি ছেড়ে দিলে, সেই উদ্দীপক প্রভাবটি কেটে যাওয়ার কারণে আপনি কাঁপুনি অনুভব করতে পারেন। কিছু লোক নিয়মিত ক্যাফেইন ওভারডেজের কারণে মাঝে মাঝে হাত কাঁপা অনুভব করেন।
উদ্বিগ্নতা বেড়ে যেতে পারে
এমনকি যদি আপনি উদ্বিগ্ন ব্যক্তি না-ও হন তবে আপনার ক্যাফেইন প্রত্যাহার কার্যকর হওয়ার সাথে সাথে আপনি অবশ্যই কিছুটা উদ্বেগের মুখোমুখি হবেন। উদ্বেগ তাদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে যারা প্রকৃত কফি লাভার ছিলেন কিন্তু যেকোন কারনে প্রিয় পানীয় খাওয়া ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অপর্যাপ্ত ক্যাফেইন সরবরাহের কারণে মস্তিষ্ক রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতায় ভোগে যার ফলে এটি ঘটে থাকে।
ঘন ঘন মাথা ব্যথা হতে পারে
দুর্ভাগ্যক্রমে, মাথাব্যথা হল ক্যাফেইনের ঘাটতি হওয়ার সবচেয়ে সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। এটি আপনার রক্তনালীগুলি খোলার কারণে ঘটে, ফলে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। একবার শরীর বর্ধিত রক্ত প্রবাহের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারলে মাথাব্যথা অবশেষে ম্লান হয়ে যায়।
আমরা জানি যে এই প্রক্রিয়ায় আপনি কেমন অনুভব করতে পারেন। এবং মাথা ব্যথার সাথে সম্পর্কিত অস্বস্তি আপনার প্রতিদিনের ক্রিয়াকলাপগুলিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
আপনি দুর্বলতা অনুভব করবেন
কফিতে আসক্ত হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হল এটি আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করে। দুর্ভাগ্যক্রমে, প্রভাবটি কেবল গড়ে ৫ ঘন্টা স্থায়ী হয়, এ কারণেই আমাদের মধ্যে অনেকে প্রতিদিন ১ কাপের বেশি কফি পান করে, এই আশায় যে সারাদিন জোরদার এবং সফলভাবে কাজে মনোনিবেশ করা যাবে।
তবে কফি পান করা বন্ধ করার পরে এটি আপনার শরীরের উপর বিপরীত প্রভাব ফেলবে। বেশিরভাগ ক্যাফেইন আসক্ত ব্যক্তিরা কফি পান করা ছেড়ে দেওয়ার সাথে সাথেই প্রচন্ড ক্লান্তি অনুভব করতে শুরু করেন।
কীভাবে এই নেতিবাচক প্রভাবগুলো হ্রাস করতে পারবেন?
আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে, আমরা যখন আমাদের দেহকে সকালের এক কাপ কফি এবং বিকালের কফি খাওয়া থেকে বঞ্চিত করি তখন আমাদের দেহ বিভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়। সুসংবাদটি হল এমন কিছু উপায় রয়েছে যার মাধ্যমে আমরা এই প্রতিক্রিয়াগুলো প্রশমিত করতে বা এমনকি প্রতিরোধ করতে পারি।
তাই আপনি যদি নিজের থেকেই কফি পান করা ছেড়ে দিতে চান এবং সেই সিদ্ধান্তের পরে শরীরের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া মোকাবেলা করতে চান তাহলে কি কি করতে হবে এক নজরে দেখে নিন।
ধীরে ধীরে কফি খাওয়া ছাড়ুন
ক্যাফেইনের নেশা ছাড়ার এটা সবচেয়ে ভালো উপায়। আপনি যদি সত্যিকারের একজন কফি লাভার হয়ে থাকেন আর দিনে ৩ কাপ কফি খেয়ে থাকেন তাহলে দিনে ৩ কাপের পরিবর্তে শুধু সকালে খান এক সপ্তাহ। তারপরের সপ্তাহে গড়ে মিলে ৩ কাপ খান।
এভাবে ধীরে ধীরে খাওয়া কমাতে থাকুন। তাহলে শরীর ক্যাফেইন গ্রহণের মাত্রার সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিবে এবং যখন আপনি পুরোপুরি কফি খাওয়া ছেড়ে দিবেন তখন আর কোন সমস্যা অনুভব করবেন না।
হাইড্রেটেড থাকুন এবং চা পান করুন
আপনি যখন এক্স-কফি লাভার হয়ে যান তখন নিজেকে হাইড্রেটেড রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন হয়ে পড়ে। তাই প্রতি ঘন্টায় এক গ্লাস পানি পান করুন। এবং কফির পরিবর্তে সকালে কাপে চুমুক দেওয়ার অভ্যাস বজায় রাখতে পছন্দের কোন চা বেঁছে নিন।
ব্যায়াম করুন এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন
স্ট্রেস থেকে দূরে থাকতে এবং এনার্জি লেভেল ঠিক রাখতে খাবার তালিকায় কোন ক্যাফেইন রাখা যাবেনা। আর সাথে প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট ব্যায়াম এবং ওয়েট লিফটিং প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।
এগুলো রক্তসঞ্চালনের জন্য খুবই ভাল এবং আপনার শক্তি বাড়িয়ে তুলতেও সাহায্য করবে। সক্রিয় থাকার কারনে আপনার মনোযোগ বেড়ে যাবে এবং কফির কথা মনেও পড়বেনা।
খাদ্য তালিকা পরিবর্তন করুন
ক্যাফেই প্রত্যাহারের সাথে মোকাবিলা করার সময় আপনার একটি বিষয় বিবেচনা করা উচিত যা হল আরও উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা। সেক্ষেত্রে বেশি বেশি ফল এবং শাকসবজী খাওয়া উচিত, কারণ এগুলি ফাইবারের সেরা প্রাকৃতিক উৎসগুলোর মধ্যে একটি। এছাড়াও এগুলো আপনার শরীরে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস সরবরাহ করবে।
তাহলে বুঝতেই পারছেন, কফি খাওয়া ছেড়ে দিলে সেটা শরীরের জন্য কতখানি উপকারী। তবে আপনি যদি কফি খাওয়া ছেড়ে দিয়ে থাকেন বা খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে থাকেন তাহলে কীভাবে করেছেন তার অভিজ্ঞতা অবশ্যই আমাদের সাথে শেয়ার করুন।
আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য পেতে আমাদের ফেজবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন।