Uncategorized

অ্যাপল সিডার ভিনেগার কতদিন ব্যবহার করা যাবে?

রান্নায় এবং বেকিং করতে প্রায় আমরা অ্যাপল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করে থাকি। মাংস মেরিনেড করা এবং সালাদ ড্রেসিং-ও বাদ যায়না। 

অ্যাপল সিডার ভিনেগার তৈরি করতে আপেল কুচি কুচি করে কেটে পানিতে ডুবিয়ে গাজন প্রক্রিয়ায় ইথানলে রুপান্তর করা হয়। প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া এই ইথানলকে এসিটিক এসিডে রুপান্তর করে, যেটা ভিনেগার তৈরির প্রধান উপাদান।  

যেকোন একটি কাজে বা রান্নায় একবারে পুরো এক বোতল অ্যাপল সিডার ভিনেগার শেষ করে ফেলা সম্ভব নয়। তাই স্বভাবতই আপনার মনে একটা প্রশ্ন জাগতেই পারে যে, এই এক বোতল ভিনেগার আসলে কতদিন ব্যবহার করা যাবে? অর্থাৎ এর শেলফ লাইফ বা মেয়াদ কতদিন। 

আজকে আমরা এসব বিষয় নিয়েই আলোচনা করব যে আসলে অ্যাপল সিডার ভিনেগার কতদিন ব্যবহার করা যাবে, কোন ভিনেগার আপনার শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনতে পারে এবং এটা ঠিকভাবে সংরক্ষণ করার কিছু উপায় সম্পর্কে।

শেলফ লাইফ এবং যথাযথভাবে সংরক্ষনের উপায় 

ভিনেগারের অম্লীয় স্বাদ একে নিজের থেকেই সংরক্ষনের ক্ষমতা প্রদান করে যার অর্থ এটা কোনদিন টক হবেনা বা মেয়াদউত্তীর্ন হবেনা। 

কোন পদার্থের পি এইচ (pH) স্কেলের উপর নির্ভর করে নির্ধারন করা হয় যে এটা আসলে কতটা অম্লীয় বা এসিডিক যার মাত্রা ০-১৪। পি এইচ (pH) এর মান ৭ এর নিচে হলে সেগুলো অম্লীয় এবং ৭ এর উপরে হলে তা ক্ষারীয়। অ্যাপল সিডার ভিনেগারের প্রধান উপাদান এসিটিক এসিড যেটার পি এইচের (pH) মান ২-৩ এর মধ্যে অর্থাৎ এটা যথেষ্ট পরিমাণে অম্লীয়।

ভিনেগারে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান এর শেলফ লাইফ বাড়িয়ে দেয়। প্রকৃতপক্ষে ভিনেগার, ই-কোলাই (E. coli), স্টাফিলোকক্কাস অরিয়াস (Staphylococcus aureus) এবং ক্যান্ডিডা অ্যালবিকানস (Candida albicans) নামক জীবানুদের দ্বারা ঘটিত সংক্রমণ রোধ করে এবং আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

এক গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে যে, কফি, সোডা, চা, জুস এবং অলিভ অয়েলের তুলনায় ভিনেগারের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান সবচেয়ে বেশি এবং শক্তিশালী। 

অ্যাপল সিডার ভিনেগার সংরক্ষনের সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে এয়ার টাইট কন্টেইনারে রেখে কোন ঠাণ্ডা এবং অন্ধকার স্থানে রাখতে হবে যেখানে সুর্যের আলো পৌছায় না যেমন- রান্না ঘরের কাবার্ডে কিংবা বেসমেন্টে। ভিনেগার ফ্রিজে রাখা অনর্থক এবং এটা এর শেলফ লাইফ বাড়াতে কোন ভুমিকাও রাখেনা। 

কীভাবে সময়ের সাথে অ্যাপল সিডার ভিনেগার পরিবর্তন হয়

একটা ভিনেগার বোতলের যত বেশি বয়স হতে থাকে তত দেখা যায় ভিনেগারের পানি অস্পষ্ট হয়ে যায় এবং বোতলের নিচে তলানি জমতে থাকে। এটার প্রধান কারণ হচ্ছে অক্সিজেন। কারণ আপনি যতবার ভিনেগার ঢালার জন্য বোতলের মুখ খোলেন ততবার এর মধ্যে অক্সিজেন প্রবেশ করে। এই অক্সিজেন, সিট্রিক এসিড এবং সালফার ডাইঅক্সাইডেরও নিঃস্বরণ ঘটায় যে দুটো উপকরণ ভিনেগার সংরক্ষনে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করে।

তবে বারবার ভিনেগারের বোতলের মুখ খোলার ফলে এই দুইটি উপকরণ বেরিয়ে যেতে থাকে এবং ভিনেগারের স্বাদ পরিবর্তন হতে থাকে। তাই যত দ্রুত সম্ভব অ্যাপল সিডার ভিনেগার শেষ করে ফেলা উচিত এবং এক বোতল দীর্ঘদিন ব্যবহার করা উচিত নয়। 

এতক্ষণে নিশ্চয় একটা সূক্ষ্ম ধারণা পেয়েছেন যে এই ভিনেগারের শেলফ লাইফ কতদিন এবং এটি আসলে কিভাবে সংরক্ষণ করতে হয় সে সম্পর্কে। তবে আবারও বলছি এক বোতল বেশিদিন ধরে ব্যবহার করবেন না।

যেহেতু অ্যাপল সিডার ভিনেগার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায় এবং প্রতিদিন আপনি গরম পানিতে মিশিয়ে এটি খেতেও পারেন তাই এক বোতল এমনিও বেশিদিন যাবেনা। তবে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটু সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য পেতে আমাদের ফেজবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button