Uncategorized

রাতে ঘুমানোর আগে এই ৭টি অভ্যাস আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে

রাতে ঘুমানোর সময় আপনার দেহ ৩০০-৪০০ ক্যালরি ক্ষয় করে থাকে যেটা টানা এক ঘণ্টা দৌড়ালে যে পরিমাণ শক্তি ক্ষয় হয় তার সমান। বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন যে, শারীরিক অনুশীলনের মতো মানসম্পন্ন ঘুমও ওজন হ্রাসে অবদান রাখতে পারে। আপনি যদি নিজের জীবনেও এর কার্যকারিতা দেখতে চান তাহলে ঘুমানোর সময় নির্দিষ্ট কিছু অভ্যাস মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যা ঘুমের মধ্যে আপনার বিপাক প্রক্রিয়াকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।

তাই Health বার্তা টিম আজকে আপনার সামনে এমন কিছু অভ্যাসের কথা তুলে ধরবে যা ওজন কমাতে আপনার খুবই উপকারী মনে হবে।

ঘুমের আগে এই অভ্যাসগুলো আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে

১। ঠাণ্ডা পরিবেশে ঘুমান

বিপাক বাড়ানোর জন্য বিশেষজ্ঞরা রাতে আপনার শোবার ঘরের তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (৬৪.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) রাখার পরামর্শ দেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ঠাণ্ডা পরিবেশ শরীরের ধূসরবর্ণের ফ্যাটি কোষগুলিকে সক্রিয় করে, যা থার্মোরোগুলেশনের জন্য দায়ী। আপনি যখন ঠান্ডা ঘরে ঘুমাচ্ছেন বা নগ্ন হয়ে ঘুমান, আপনার শরীর তাপ বজায় রাখতে আরও শক্তি পোড়াতে শুরু করে। একারণেই সকালে ঘুম থেকে উঠে আপনার নিজেকে রাতের চেয়ে বেশি পাতলা মনে হবে।

২। বেশি বেশি আঙ্গুরের জুস খান

আঙ্গুরের রসে রেসভেরাট্রোল নামক একটি বিশেষ উপাদান রয়েছে যার কারণে এটি ক্যালরি বার্ন করতে সহায়তা করে। এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর সাদা ফ্যাটকে বেইজ ফ্যাটে রূপান্তর করে। আপনি যখন ঘুমাবেন, আপনার শরীর আপনাকে উষ্ণ রাখার জন্য বেইজ ফ্যাট ব্যবহার করে।

সুতরাং, আপনি বিছানায় যাওয়ার আগে এক কাপ আঙ্গুরের রস খেলে অতিরিক্ত গ্রীস আপনার শরীরে জমাট বাঁধার পরিবর্তে তা থেকে মুক্তি দিবে। অতিরিক্ত চিনি খাওয়া এড়িয়ে চলতে তাজা ফলের জুস খান। এবং এটি বাড়িতে বানিয়ে খাওয়াই উত্তম কারণ বাজারের কেনা জুসে বেশি পরিমাণে অ্যাডেড সুগার থাকে যেটা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

৩। সুনিদ্রিস্ট সময়ে ঘুমাতে যান এবং সকালে একই সময়ে উঠুন

গবেষণা বলছে, অনিয়ন্ত্রিত ঘুমের সময়সূচী অতিরিক্ত ওজন বাড়ানোর সাথে যুক্ত। সাধারণত হরমোন মেলাটোনিন আমাদের কখন বিছানায় যেতে হবে তা বলে থাকে। এটি বেইজ ফ্যাট কোষগুলিকে সক্রিয় করতে সাহায্য করে যা ক্যালরি বার্ন করতে সহায়তা করে। আপনি যদি অনিয়ন্ত্রিতভাবে ঘুমান তাহলে এটি আপনার মেলাটোনিন উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায় এবং আপনি শান্তিপূর্ণ ঘুম থেকে নিজেকে বঞ্চিত করেন।

ফলস্বরূপ, আপনি সকালে ক্লান্তি বোধ করেন এবং আপনার শক্তি বাড়ানোর জন্য উচ্চ-ক্যালরিযুক্ত স্ন্যাকস খেতে চান। এই সমস্যা এড়িয়ে চলতে প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং একই সময়ে ঘুম থেকে উঠুন।

৪। বেশি করে প্রোটিনযুক্ত স্নাক্স খান

ঘুমাতে যাওয়ার আগে স্নাক্স খাওয়া দোষের কিছু নয় যদি আপনি সঠিক খাবার নির্বাচন করতে পারেন। এজন্য উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার বেছে নিন যেমন- টক দই, লো-ফ্যাটের কটেজ চিজ, পি-নাট বাটার ইত্যাদি। এগুলো আপনার বিপাক প্রক্রিয়াকে বৃদ্ধি করবে এবং মাংসপেশিতে শক্তি যোগাবে।

৫। ঘুমানোর আগে ব্যায়াম করুন

ঘুমানোর আগে শরীরচর্চা হচ্ছে মানসিক চাপ ঝেড়ে ফেলা ও মেটাবোলিজম রেট বৃদ্ধি করার সেরা উপায়। কার্ডিও এবং এ্যারোবিক উভয় ব্যায়ামই বেশ উপকারী তবে যে ব্যায়ামগুলোতে কষ্ট বেশি সেগুলো মেদ কমাতেও বেশি কার্যকর।

রাতে সাঁতার কাটা কিংবা ওয়েট উত্তোলন করা আপনার ভালো ঘুম হওয়ার একটি উত্তম উপায়। আর এগুলোর জন্য আপনাকে বেশি পরিশ্রম করা লাগে না আবার রাতে আপনার ঘুমও ভালো হয়।

৬। হারবাল চা পান করুন

কিছু নির্দিষ্ট চা আপনাকে ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে না, আমরা সেই ধরণের চা এর কথা বলছিনা যেগুলো আপনাকে রাতারাতি মেদ কমানোর আশ্বাস দিয়ে থাকে। প্রাকৃতিক হারবাল চা সত্যিই অনেক বেশি উপকারী এবং এটি বিভিন্ন ভাবে আপনার শরীরকে ফিট রাখতে সাহায্য করে। দারচিনি প্রদাহ দূর করে এবং সকালে বমি বমি ভাব হওয়া প্রতিরোধ করে। মেন্থল ক্ষুধা হ্রাস করে এবং স্নাক্সের প্রতি আপনার আগ্রহ কমায়। ক্যামোমাইল হজমে সাহায্য করে এবং আপনার স্নায়ু শিথিল রাখে।

আপনি যদি আজ থেকেই এই টিপসগুলো মেনে চলা শুরু করেন তবে একমাসের মধ্যেই নিশ্চিত ফল পাবেন। তবে যদি আপনি ব্যায়াম না করেন ও স্বাস্থ্যকর খাবার না খান তবে কোনভাবেই আপনি এগুলো থেকে অলৌকিক কিছু আশা করতে পারবেন না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button