Uncategorized

৫টি স্বাস্থ্যকর জুসের রেসিপি যা আপনি ১  মিনিটেই বানিয়ে ফেলতে পারবেন

প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হোমমেড পানীয়গুলো সবসময়ই যেকোনো সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে থাকে। এমনকি ওজন বাড়ানোর সমস্যা থেকে শুরু করে ব্রণের সমস্যা পর্যন্ত সমাধান করে থাকে। ইন্টারনেটে একটু সার্চ করলেই এতো এতো রেসিপি পাবেন যে কনফিউজড হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তাই আজকের পোস্টে এমন ৫টি জুসের রেসিপি জানতে পারবেন যেটা আপনার স্বাস্থ্য পরিবর্তন করে দিতে যথেষ্ট।

১। কলা এবং ওটমিলের স্মুদি

কলা এবং ওটমিলের স্মুদি

প্রতিদিন সকালটা পজিটিভভাবে শুরু করা খুবই জরুরি। তাই সকালের নাস্তায় সুস্বাদু ও হাই প্রোটিনসমৃদ্ধ কলা এবং ওটমিলের স্মুদি হতে পারে আপনার নিত্য দিনের সঙ্গী। কলার মতো এতো গুণসম্পন্ন সহজলভ্য ও সস্তা ফল হয়ত আর দ্বিতীয়টি হয়না। এটি রক্তে চিনির মাত্রা ঠিক রাখে, হার্টকে সুস্থ রাখে, খাবার পরিপাকে সাহায্য করে এবং আপনাকে সারাদিন অ্যাক্টিভ থাকতে সাহায্য করে।

ওটমিলেও রয়েছে শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপাদান যেমন- ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক এবং ভিটামিন বি1 ও বি5 । এছাড়াও স্মুদিকে আরও টেস্টি করে তুলতে এতে একটু কমলার রসও যোগ করতে পারেন যা থেকে ভিটামিন সি ও পেয়ে যাবেন। আর এটি শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে।

এই স্মুদি তৈরি করতে আপনার লাগবে ১ কাপ লো ফ্যাট দুধ, ১ কাপ কমলার রস, একটা মিডিয়াম সাইজ কলা এবং এক বাটি ইনস্ট্যান্ট ওটমিল। তবে চাইলে সাথে কিছু বরফের কুচিও যোগ করতে পারেন। সবকিছু একসঙ্গে ব্লেন্ড করলেই আপনার স্মুদি তৈরি হয়ে যাবে। প্রতিদিন এটা খাওয়া শুরু করুন আর নিজেই নিজের ভেতরের পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবেন। 

২। তরমুজ এবং শশার জুস

তরমুজ এবং শশার জুস

গুরুত্বপূর্ণ কাজের সময় মাথা ব্যথা বা মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দিলে সেটা খুবই বিরক্তিকর লাগে। আর এটাই সবথেকে উপযুক্ত সময় তরমুজ এবং শশার জুস খাওয়ার।

এই জুসটি বানানোর জন্য আপনার লাগবে অর্ধেক তরমুজ, অর্ধেক শশা, ১ টেবিল চামচ মধু এবং ২টি পুদিনা পাতা। তরমুজের বিচি ফেলে দিয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কাটুন এবং শশারও বিচি ফেলে দিয়ে ছোট করে কেটে নিন। সবগুলো উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করলেই তৈরি হয়ে যাবে সুস্বাদু জুস। সাথে কিছু বরফের টুকরোও যোগ করতে পারেন।

তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে সাথে পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামও আছে। এগুলো আপনাকে হাইড্রেট রাখে এবং শরীরের অভ্যন্তরীণ সিস্টেমকে সচল রাখে।

এছাড়াও শশাতে ৯৬% পানি থাকে এবং সাথে ভিটামিন বি ও ইলেক্ট্রোলাইটস থাকে যেটা আপনার মাথা ব্যথা কমানোর জন্য পর্যাপ্ত পুস্টিউপাদান সরবরাহ করে থাকে। মধুতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান ইনস্ট্যান্টলি মাথা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এমনকি মাইগ্রেনের ব্যথাও ভ্যানিশ করে দেয়। তাই আপনি যদি প্রায়শই মাথা ব্যথার সমস্যাই ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত এই জুস পান করা শুরু করুন। 

৩। টমেটো, শশা এবং গাজরের জুস 

ঘন, কালো, লম্বা চুল পাওয়া যেকোনো মেয়েরই স্বপ্ন। তবে অধিকাংশ মানুষ যে ভুলটি করে থাকে তাহল- ভেতর থেকে যত্ন নেওয়ার পরিবর্তে শুধুমাত্র বাইরে থেকেই চুলের যত্ন নিয়ে থাকে। তাই এক্ষেত্রে টমেটো, শশা এবং গাজরের জুস হতে পারে আপনার পরম বন্ধু।

টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি এবং ই থাকে যেটা চুলের বৃদ্ধির জন্য প্রভাবক হিসাবে কাজ করে। এছাড়াও খুশকি দূর করতে, চুল পড়া কমাতে এবং মাথার তালুর গন্ধ দূর করতে এগুলো খুবই দরকারি। দ্রুত ফল পেতে প্রতিদিন টমেটো খেতেও পারেন আবার হেয়ার মাস্ক তৈরি করে চুলে মাখতেও পারেন।

চুলের বৃদ্ধির জন্য গাজরও খুব উপকারী কারণ এতেও ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস ছাড়াও ভিটামিন বি, সি এবং ই থাকে যা মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে যেটা প্রাকৃতিকভাবে চুল বেড়ে ওঠার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, নিয়মিত গাজর খেলে অকালে চুল পেকে যাওয়া রোধ হয়। আর শশার উপকারিতা তো আগেই জেনেছেন। ৪টি গাজর, ১টি শশা এবং ১টি টমেটো একসঙ্গে ব্লেন্ড করে প্রতিদিন খাওয়ার চেষ্টা করুন। 

৪। বিট কপি আর গাজরের জুস

বিট কপি আর গাজরের জুস

আমাদের মধ্যে অনেকেরই ব্রণের সমস্যা খুবই সাধারণ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর আপনিও যদি এই সমস্যাই ভুগে থাকেন তাহলে বিট কপি আর গাজরের জুস হতে পারে আপনার জন্য লাইফ সেভিং ড্রিংক।

অর্ধেক লেবুর রস, ২কাপ গাজর কুচি, ১টি ছোট আপেল, ১টি লাল রঙের বিট কপি এবং অল্প পরিমাণ আদা কুচি একসঙ্গে ব্লেন্ড করে জুস বানিয়ে খেয়ে নিন।

সপ্তাহ ৩দিন এই জুস খেলে আপনার ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয়। লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে যেটা শরীরে কোলাজেন উৎপাদনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিট কপিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের বলিরেখা দূর করে বয়সের ছাপ পড়তে দেয়না। 

৫। জাম্বুরা এবং শশার জুস

জাম্বুরা এবং শশার জুস

আজকের যুগে ওজন নিয়ে চিন্তা করেন না এমন লোক হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবেনা। আর জাম্বুরা এবং শশার জুস সেক্ষেত্রে আপনার পরম বন্ধু হতে পারে! জাম্বুরা বা মোসম্বিলেবুতে এক ধরণের এনজাইম থাকে যেটার নাম এ এম পি- অ্যাক্টিভেটেড প্রোটিন কাইনেজ। এই এনজাইম আপনার শরীরের চিনি প্রক্রিয়াকরণ এবং বিপাকে সাহায্য করে। যার ফলে ক্যালরি দ্রুত ক্ষয় হয়।

অন্যদিকে শশা লিভারকে ডিটক্সিফাই করে এবং আপনার শরীরকে সতেজ রাখে। এই জুসটি তৈরি করতে ১টি মিডিয়াম সাইজের জাম্বুরা নিন, অর্ধেক শশা টুকরো করে কেটে নিন, অর্ধেক লেবু এবং কিছু পুদিনা পাতা নিন। সবগুলো উপকরণ ব্লেন্ডারে ঢেলে দিন আর সাথে এক কাপ পানি দিয়ে ব্লেন্ড করুন। তৈরি হয়ে গেলো মজাদার ওয়েট লস ড্রিংক। 

আপনি তাহলে কোন ড্রিংকটি বেঁছে নিচ্ছেন? অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button